Visa

ওমরা ভিসা আবেদন বিস্তারিত ২০২৫

ওমরা শব্দের অর্থ হলো ভ্রমণ করা। প্রতিমাসেই দেশ বিদেশের অসংখ্য মুসলিম ওমরা করার জন্য মক্কা মদিনার সফর করে থাকেন। কারণ,জীবনে একবার ওমরা করা সুন্নতে মুয়াক্কাদার অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া,মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের সূরা বাকারার ১৯৬ নম্বর আয়াতে তার উদ্দেশ্যে হজ ও ওমরা পরিপূর্ণভাবে পালন করার কথা বলেছেন।

ওমরা হজ যখনই করা হোক না কেন,এটাতে ব্যক্তির জন্য প্রতিদান ও বরকত নিহিত রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ মুসলিমই জানেনা ওমরা ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয়। এজন্য প্রায়ই তারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগতে থাকেন।

আজকের এ পোস্টটিতে আমি জানাতে চলেছি উমরা ভিসা আবেদনসহ যাবতীয় তথ্যাবলী যেমন,ওমরা ভিসা আবেদন করার নিয়ম,ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস,ভিসার ধরন,খরচ কত,মেয়াদ কতদিন,ওমরা পালনের উপযুক্ত সময়,প্যাকেজসমূহ,অবৈধভাবে ওমরা পালনের শাস্তি সহ যাবতীয় বিষয়।

ওমরা ভিসা আবেদন করার নিয়ম

ওমরা ভিসা আবেদন কিভাবে করবো এ প্রশ্নটি অনেকের। প্রকৃতপক্ষে,আপনি আপনার পাসপোর্টের মাধ্যমে ওমরা ভিসার আবেদন করতে পারবেন। এখন প্রশ্ন হলো আমার যদি পাসপোর্ট না থাকে তাহলে কি আমি ওমরা ভিসার আবেদন করতে পারবে না? উত্তরটি হলো অবশ্যই আপনি পাসপোর্ট ছাড়া ওমরা ভিসার আবেদন করতে পারবেন।

তবে এক্ষেত্রে, আপনাকে E-PASSPORT এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে PASSPORT এর জন্য আবেদন করতে হবে। এটা করার পর আপনি ওমরা ভিসার জন্য আবেদন করতে সক্ষম হবেন।

ওমরা ভিসার জন্য অনেকে নিজে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে থাকেন। তবে,এক্ষেত্রে উত্তম পন্থা হলো কোন এজেন্সি থেকে ওমরা ভিসার জন্য প্যাকেজ কিনে নেওয়া। একা হজে গিয়ে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও সমস্যার সম্মুখীন হওয়া থেকে বিরত রাখতে এটা আপনাকে দারুন ভাবে সহযোগিতা করবে।

আপনি অনলাইনে উমরা ভিসার জন্য আবেদনে আগ্রহী হলে, এজেন্সি থেকে উমরা প্যাকেজ কিনে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ওমরা প্যাকেজের খরচের দিকটা বিবেচনায় রাখতে হবে।

বিভিন্ন এজেন্সিগুলো আপনাকে সৌদি ভ্রমণে সহযোগিতা সহ যাবতীয় বিষয় যেমন,হোটেল ও রেস্টুরেন্টে যাতায়াত সংক্রান্ত কাজে সহযোগিতা,ভিসা আবেদনে সহযোগিতা,ওমরা পালন করতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া সহ জরুরী সব কাজে দারুন ভাবে সহযোগিতা করে থাকে।

ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

ওমরা ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলোর বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো।

  • একটি বৈধ এবং গ্রহণযোগ্য পাসপোর্ট এবং এটার মেয়াদ ন্যূনতম ৬ মাস অবশিষ্ট থাকতে হবে।
  • পাসপোর্টে ন্যূনতম চারটি খালি পৃষ্ঠা থাকতে হবে। যেখানে থাকবে উমরা ভিসার সিল বা আপনি সৌদি আরবে যাবেন আসবেন তার এন্ট্রি এক্সিট সিল দেওয়া যেতে পারে।
  • আবেদন করার সময় দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের সাম্প্রতিক তোলা রঙিন ছবি প্রয়োজন।এবং ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড অবশ্যই সাদা হতে হবে।
  • এনআইডি কার্ড বা স্মার্ট কার্ডের অরিজিনাল কপি প্রয়োজন।
  • অপ্রাপ্তবয়স্ক বা শিশু হলে এবং এনআইডি কার্ড না থাকলে অনলাইন থেকে জন্ম সনদের অরজিনাল কপি প্রয়োজন।
  • বিবাহিত হলে ম্যারেজ সার্টিফিকেট প্রয়োজন। এবং সেটা অবশ্যই সরকারি ম্যারেজ সার্টিফিকেট সনদ হতে হবে।
  • মহিলা হলে এবং বয়স ৪৫ বছর বা তার কম হলে আইনগত অভিভাবক বা মাহরাম পুরুষের একটি অনুমতি পত্র লাগবে।
  • হোটেল বুকিং এর প্রমাণপত্র অবশ্যই থাকতে হবে।
  • সৌদি আরবে যাওয়া এবং আসার রিটার্ন এয়ার টিকিটের বুকিং কপি।

ভিসার ধরন

উমরা ভিসা আবেদন সম্পর্কে জেনে নেওয়ার পর এবার জানবো ভিসার ধরন সম্পর্কে।

ওমরা ভিসাঃওমরা ভিসা পালনের জন্য সৌদি সরকার ৯০ দিনের মেয়াদী ভিসা প্রদান করে থাকে। তবে,এ ভিসা শুধুমাত্র মক্কা-মদিনা ব্যতীত সৌদি আরবের অন্য কোন স্থানে ভ্রমণের অনুমতি দেয় না।

টুরিস্ট বা ভ্রমন ভিসাঃ ভ্রমণের জন্য সৌদি সরকার এ ভিসা প্রদান করে থাকে। আপনি এ ভিসার মাধ্যমে সৌদি আরবের অনুমোদিত সকল স্থানগুলো ঘুরে দেখতে পারবেন। তবে এ ভিসা আপনাকে ওমরা পালন করার অনুমতি প্রদান করে না।

ওমরা ভিসার খরচ কত?

ওমরা ভিসা আবেদনের পর অনেকের মনে খরচের বিষয়টা নিয়ে প্রশ্ন জাগে। বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গেল ভিসায় ওমরা করার উদ্দেশ্যে সেখানে যেতে চাইলে প্রসেসিং ফী সহ খরচের পরিমাণ হবে ২৩,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা। আপনি গ্রুপ বা ফ্যামিলি ভিসায় যেতে চাইলে প্রসেসিং ফি সহ খরচের পরিমাণ হবে ৯২,০০০ থেকে ১,৬০,০০০ টাকা।

ভিসার মেয়াদ কতদিন?

ওমরা ভিসার মেয়াদ কতদিন সেটা সম্পর্কে জানা একান্ত জরুরী। হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায় তিন মাসের ওমরা ভিসার মেয়াদ ভিসা ইস্যুর তারিখ থেকে শুরু হবে। যেটি আগে সৌদি আরবের প্রবেশের তারিখ থেকে শুরু হতো। হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা যায় যে,সৌদির বাইরে থেকে যারা ওমরা ভিসায় আসবেন তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হবে আরবি জিলকদ মাসের ১৫ তারিখে। তবে,আরব নিউজের এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়,নুসুক আ্যাপের মাধ্যমে ওমরা পালনের জন্য আবেদনকারীরা ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ভিসা পেয়ে যাবেন এবং ওমরা ভিসার মেয়াদ ৩০ দিন থেকে বৃদ্ধি করে ৯০ দিন করা হয়েছে।

ওমরা করার উপযুক্ত সময়

অনেকেই আছেন যারা ওমরা ভিসা আবেদনের সাথে সাথে সেটা পালন করার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে প্রশ্ন করে থাকেন। নিচে সে বিষয়টা সম্পর্কে সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হলো।

আপনি যদি আরামদায়ক পরিবেশে ওমরা পালন করতে চান তাহলে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস আপনার জন্য উপযুক্ত হবে।

আপনি কম খরচে ওমরা পালন করতে চাইলে উপরোক্ত মাস দুটি ব্যতীত বছরের যে কোন সময়কে বেছে নিতে পারেন।

ধর্মীয় দিকটাকে বিবেচনায় রাখলে উমরা পালনের জন্য রমজান মাসটাকে বেছে নিতে পারেন।

উমরা প্যাকেজসমূহ

ওমরা হজ পালন করার জন্য বাংলাদেশের নানা ধরনের প্যাকেজ বিদ্যমান রয়েছে।নিচে উল্লেখযোগ্য প্যাকেজগুলোর পরিচিতি তুলে ধরা হলো।

FAMILY UMRAH PACKAGE

CORPORATE UMRAH PACKAGE

PREMIUM UMRAH PACKAGE

RAMADAN UMRAH PACKAGE

অবৈধভাবে ওমরা পালনের কুফল

কেউ যদি অবৈধভাবে ওমরা পালন করে থাকে তাহলে তাকে ১০ হাজার রিয়াল জরিমানা সহ কারাদণ্ড বরণ করতে হতে পারে। তাই অবৈধভাবে ওমরা পালন করা থেকে আমাদের সকলকে বিরত থাকতে হবে।

শেষ কথা

উপরিউক্ত পোস্টটিতে আমি ওমরা ভিসা আবেদন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় অত্যন্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরেছি। আশাকরি,পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে আপনারা ওমরা ভিসা আবেদন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়গুলো বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। ভিসা সংক্রান্ত এ রকম সুন্দর সুন্দর পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।

আরো জানুনঃ

সৌদি ভিসা চেক সহজ নিয়মে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button