Wages

আমেরিকা সর্বনিম্ন বেতন কত ২০২৫ (আপডেট তথ্য)

আমেরিকা সর্বনিম্ন বেতন কত সেটা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে এ পোস্টটি  আপনার জন্য। বর্তমানে আমেরিকা অনেকের কাছেই স্বপ্নের দেশ। উন্নত জীবন, ভালো রোজগার -এই সবকিছুই যেন আমেরিকার প্রতি একটা আলাদা আকর্ষণ তৈরি করেছে। আজকের এ  ব্লগ পোস্টটিতে  আমরা এই বিষয়গুলো নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করব।

আমেরিকা সর্বনিম্ন বেতন কত?

আমেরিকা সর্বনিম্ন বেতন কত সেটা জানার আগ্রহ অনেকের। দেশটির সর্বনিম্ন বেতন আসলে ফেডারেল এবং রাজ্য সরকারের উপর নির্ভর করে। ফেডারেল সরকার একটি নির্দিষ্ট সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করে দেয়, কিন্তু রাজ্য সরকারগুলো চাইলে নিজেদের মতো করে সেটি পরিবর্তন করতে পারে।

ফেডারেল সর্বনিম্ন বেতন

বর্তমানে, ফেডারেল সর্বনিম্ন বেতন প্রতি ঘন্টায় ৭.২৫ ডলার। তবে, এই বেতন ২০০৯ সাল থেকে অপরিবর্তিত রয়েছে। এর মানে হলো, ফেডারেল সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো কর্মীকে ঘন্টায় অন্তত ৭.২৫ ডলার দিতেই হবে।

রাজ্যভিত্তিক সর্বনিম্ন বেতন

আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্যে সর্বনিম্ন বেতন ভিন্ন ভিন্ন। কিছু রাজ্য ফেডারেল বেতনের চেয়ে বেশি বেতন প্রদান করে। নিচে কয়েকটি রাজ্যের সর্বনিম্ন বেতন উল্লেখ করা হলোঃ

  • ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের প্রতি ঘন্টার সর্বনিম্ন বেতন ১,৮৯৫.৯৬ টাকা।
  • নিউইয়র্কের প্রতি ঘন্টার সর্বনিম্ন বেতন ১,৮৩৪.৮ টাকা।
  • ওয়াশিংটন রাজ্যের প্রতি ঘন্টার সর্বনিম্ন বেতন ১৯২৫.৩১৬৮ টাকা।
  • ম্যাসাচুসেটস রাজ্যের প্রতি ঘন্টার সর্বনিম্ন বেতন ১,৮৩৪.৮ টাকা।
  • অ্যারিজোনার প্রতি ঘন্টার সর্বনিম্ন বেতন ১,৬৯৪.১৩২ টাকা ।

এই তালিকা থেকে এটা স্পষ্ট যে, কিছু রাজ্য ফেডারেল সর্বনিম্ন বেতন থেকে দ্বিগুণেরও বেশি বেতন দিয়ে থাকে। তাই, আপনি যদি আমেরিকায় কাজ করতে যেতে চান, তাহলে কোন রাজ্যে যাচ্ছেন, সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

শহরভিত্তিক সর্বনিম্ন বেতন

কিছু শহর তাদের নিজ নিজ অঞ্চলে আরও বেশি সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করে। যেমন, সিয়াটল বা সান ফ্রান্সিসকোর মতো শহরে সর্বনিম্ন বেতন আরও বেশি হতে পারে।

আমেরিকা কোন কাজের বেতন বেশি?

আমেরিকা সর্বনিম্ন বেতন কত সেটা জানার পাশাপাশি দেশটির কোন কাজের বেতন বেশি সেটা সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন। দেশটিতে বিভিন্ন কাজের সুযোগ রয়েছে, এবং কিছু কিছু কাজের বেতন অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে আপনি ভালো বেতনের চাকরি খুঁজে নিতে পারেন। নিচে কয়েকটি বেশি বেতনের কাজের তালিকা দেওয়া হলোঃ

স্বাস্থ্যসেবা

স্বাস্থ্যসেবা খাতে আমেরিকাতে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ডাক্তার, নার্স, ফার্মাসিস্ট, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন বেশ ভালো।

  • একজন ডাক্তারের গড় বেতন বছরে ২,০০,০০০ – ৩,০০,০০০ ডলার বা তারও বেশি হতে পারে। বিশেষ করে সার্জন এবং স্পেশালিস্টদের চাহিদা এবং বেতন দুটোই বেশি।
  • রেজিস্টার্ড নার্সদের গড় বেতন বছরে ৭০,০০০ – ৯০,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
  • একজন ফার্মাসিস্টের গড় বেতন বছরে ১,২০,০০০-১,৫০,০০০ পর্যন্ত হতে পারে।

প্রযুক্তি

প্রযুক্তি খাতে আমেরিকাতে কাজের সুযোগের অভাব নেই। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ডেটা সায়েন্টিস্ট, এবং আইটি ম্যানেজারের মতো পদগুলোতে ভালো বেতন পাওয়া যায়।

  • একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের গড় বেতন বছরে ১,০০,০০০ -১,৫০,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
  • ডেটা সায়েন্টিস্টদের গড় বেতন বছরে ১,২০,০০০ -১,৮০,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
  • একজন আইটি ম্যানেজারের গড় বেতন বছরে ১১০০০০- ১,৬০,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।

ব্যবস্থাপনা

ব্যবস্থাপনা খাতেও ভালো বেতনের সুযোগ রয়েছে। ফিনান্সিয়াল ম্যানেজার, মার্কেটিং ম্যানেজার, এবং জেনারেল ম্যানেজারদের চাহিদা সবসময় থাকে।

  • একজন ফিনান্সিয়াল ম্যানেজারের গড় বেতন বছরে ১,২০,০০০- ১,৮০,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
  • মার্কেটিং ম্যানেজারদের গড় বেতন বছরে ১,০০,০০০- ১,৫০,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
  • একজন জেনারেল ম্যানেজারের গড় বেতন বছরে ১,১০,০০০- ১,৭০,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।

আমেরিকায় প্রবাসীদের বেতন কত?

আমেরিকা সর্বনিম্ন বেতন কত জানার সাথে সাথে এবার দেশটির প্রবাসীদের বেতন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। সেখানকার প্রবাসীদের বেতন বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে। এর মধ্যে প্রধান হলো কাজের ধরন, অভিজ্ঞতা, শিক্ষা এবং বসবাসের স্থান। একজন প্রবাসী কর্মী তার নিজ দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ভালো বেতন পেতে পারেন।

গড় বেতন

আমেরিকায় একজন প্রবাসী কর্মীর গড় বেতন বছরে ৫০,০০০ – ৮০,০০০ ডলার হতে পারে। তবে, এটি একটি আনুমানিক হিসাব। আপনার প্রকৃত বেতন আপনার কাজের ধরন এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করবে। নিচে কিছু উদাহরণের মাধ্যমে  বিষয়টি সুন্দরভাবে তুলে ধরা হলোঃ

  • একজন আইটি পেশাজীবীর বেতন বছরে ৭০,০০০- ১,৫০,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
  • একজন স্বাস্থ্যসেবা কর্মীর বেতন বছরে ৬০,০০০-১,২০,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
  • একজন নির্মাণ শ্রমিকের বেতন বছরে ৩০,০০০- ৫০,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।

আমেরিকা কোন কাজের চাহিদা বেশি?

আমেরিকা সর্বনিম্ন বেতন কত সেটা জানতে গিয়ে অনেকে দেশটির চাহিদা সম্পন্ন কাজগুলো সম্পর্কে প্রশ্ন করে থাকেন। দেশটিতে বর্তমানে কিছু নির্দিষ্ট কাজের চাহিদা খুব বেশি। আপনি যদি আমেরিকায় কাজ করতে যেতে চান, তাহলে এই কাজগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন।

স্বাস্থ্যসেবা

আমেরিকায় স্বাস্থ্যসেবা খাতে দক্ষ কর্মীর প্রচুর অভাব রয়েছে। বিশেষ করে নার্স, থেরাপিস্ট, এবং মেডিকেল টেকনিশিয়ানদের চাহিদা খুব বেশি।

প্রযুক্তি

প্রযুক্তি খাতে দক্ষ কর্মীর চাহিদা সবসময়ই বেশি। সফটওয়্যার ডেভেলপার, ডেটা সায়েন্টিস্ট, এবং সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্টদের চাহিদা বর্তমানে তুঙ্গে।

নির্মাণ

আমেরিকায় নির্মাণ খাতেও কাজের সুযোগ বাড়ছে। কনস্ট্রাকশন ম্যানেজার, ইলেক্ট্রিশিয়ান, এবং প্লাম্বারদের চাহিদা বাড়ছে।

এগুলো ছাড়াও আমেরিকার অন্যান্য চাহিদা সম্পন্ন পেশাগুলার মধ্যে রয়েছে, মার্কেট রিসার্চ অ্যানালিস্ট, ফিনান্সিয়াল অ্যানালিস্ট, লজিস্টিকস ম্যানেজার ইত্যাদি।

আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে?

আমেরিকা সর্বনিম্ন বেতন কত সেটা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে এবার জানাবো দেশটিতে যেতে কত টাকা লাগে সেটা সম্পর্কে। প্রকৃতপক্ষে সেখানে যেতে কত টাকা লাগবে, তা নির্ভর করে আপনার ভিসা, বিমান ভাড়া, এবং অন্যান্য খরচের উপর। নিচে এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

ভিসা খরচ

আমেরিকা যাওয়ার জন্য ভিসার প্রয়োজন হয়। ভিসার খরচ ভিসার ধরনের উপর নির্ভর করে। কিছু প্রধান ভিসার খরচ নিচে দেওয়া হলো:

  • পর্যটন বা ব্যবসায়িক  ভিসার জন্য আবেদন ফি ১৬০ ডলার।
  • স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন ফি ১৬০ ডলার।
  • কর্মসংস্থান ভিসার জন্য আবেদন ফি ১৯০ ডলার।
  • বিমান ভাড়া

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকার বিমান ভাড়া সাধারণত ৮০০- ১,৫০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। এটি নির্ভর করে আপনি কোন সময়ে টিকিট কাটছেন এবং কোন এয়ারলাইন্সে যাচ্ছেন।

অন্যান্য খরচ

  •  নতুন পাসপোর্ট করতে অথবা পাসপোর্ট রিনিউ করতে প্রায় ১৫০ – ২০০  ডলার লাগতে পারে।
  •  আমেরিকা যাওয়ার আগে কিছু মেডিকেল পরীক্ষা করাতে হয়, যার খরচ ১০০- ২০০ ডলার হতে পারে।
  • আমেরিকাতে প্রথম কয়েকদিনের জন্য থাকার খরচ বাবদ ৫০০- ১,০০০ ডলার লাগতে পারে।
  • খাবার, পরিবহন, এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত খরচ বাবদ আরও কিছু টাকা রাখতে পারেন।

মোট খরচ

সব মিলিয়ে আমেরিকা যেতে আপনার প্রায় ২,০০০ -৪ ,০০০ ডলার লাগতে পারে। এটি একটি আনুমানিক হিসাব, এবং আপনার প্রকৃত খরচ এর চেয়ে কম বা বেশি হতে পারে।

আমেরিকার শ্রমিকের বেতন কত?

আমেরিকা সর্বনিম্ন বেতন কত সেটা জানা যেমন জরুরী তেমনি জরুরী দেশটির শ্রমিকদের বেতন সম্পর্কে জানা। সেখানকার শ্রমিকদের বেতন বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। কাজের ধরন, অভিজ্ঞতা, এবং বসবাসের স্থান-এই সবকিছুই একজন শ্রমিকের বেতন নির্ধারণ করে।

  • নির্মাণ শ্রমিকদের গড় বেতন ঘন্টায় ১৫-২৫ ডলার হতে পারে।
  • কৃষি শ্রমিকদের গড় বেতন ঘন্টায় ১২-১৮ ডলার হতে পারে।
  • কারখানার শ্রমিকদের গড় বেতন ঘন্টায় ১৪-২২ডলার  হতে পারে।
  • পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের গড় বেতন ঘন্টায় ১১-১৭ডলার হতে পারে।

গড় বেতন

আমেরিকায় একজন শ্রমিকের গড় বেতন বছরে ৩০,০০০-৫০,০০০ ডলার হতে পারে। তবে, এটি একটি আনুমানিক হিসাব। আপনার প্রকৃত বেতন আপনার কাজের ধরন এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করবে।

FAQs

প্রশ্নঃকোন রাজ্যে সর্বনিম্ন বেতন সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে?

উত্তরঃ ওয়াশিংটন এবং ক্যালিফর্নিয়ায় সর্বনিম্ন বেতন সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।

প্রশ্নঃআমেরিকার সর্বনিম্ন বেতন কে নির্ধারণ করেন?

উত্তরঃ Us ডিপার্টমেন্ট অফ লেবার বা শ্রম বিভাগ সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করে থাকেন।

প্রশ্নঃওভারটাইম কাজের জন্য কত বেতন প্রদান করা হয়?

উত্তরঃ ৪০ ঘন্টার বেশি কাজ করলে স্বাভাবিক রেটের চেয়ে ১.৫ গুণ দেওয়া হয়।

আরো জানুনঃ

মালয়েশিয়া কনস্ট্রাকশন কাজের বেতন কত

মলদোভা কাজের বেতন কত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button