কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত এটা জানতে মানুষ অনেক আগ্রহী। কারণ কোম্পানি ভিসায় দেশটিতে গিয়ে অনেকেই ক্যারিয়ার ও সমৃদ্ধ জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখে থাকেন।কুয়েতি মুদ্রার নাম দিনার এবংরাজধানী কুয়েত সিটি। এটি তেল সমৃদ্ধ একটি দেশ।
তেল উৎপাদন ও রপ্তানি করার জন্য কুয়েতে সরকারি ও বেসরকারি নানা ধরনের কোম্পানি রয়েছে,যেগুলো বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের নিয়োগ প্রদান করে থাকে।এসব কোম্পানিগুলোতে বেতনের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।
কিন্তু অনেকে জানেন না কুয়েত কোম্পানি ভিসায় বেতন কত? আপনি যদি কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন ও অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে সুন্দরভাবে জানতে চান তাহলে এ পোস্টটি আপনার জন্য। এ পোস্টটিতে আমি তুলে ধরবো কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত,সর্বনিম্ন বেতন কত,ভিসার দাম কত,কোম্পানি ভিসা পাওয়ার উপায়,কুয়েত কোম্পানি ভিসা কোন কাজের চাহিদা বেশি ইত্যাদি।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত?
কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত এটা জানা একান্ত জরুরী। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে দেশটির বিভিন্ন কোম্পানি শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে।ইতোমধ্যে অনেকেই সমৃদ্ধ এ দেশটিতে বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত রয়েছেন আবার অনেকে সেখানে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।কিন্তু বেশিরভাগ মানুষেরই কুয়েত কোম্পানি ভিসা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না থাকায় নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
দেশটির কোম্পানি ভিসা সম্পর্কে একটা পরিপূর্ণ ধারণা থাকলে কোন দালাল বা এজেন্সি আপনাকে প্রতারিত করার সুযোগ পাবে না। সাধারণত,কুয়েতের কোম্পানি ভিসার বেতন হয়ে থাকে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা।আবার কিছু কিছু কোম্পানি রয়েছে যেটা দেড় লক্ষ থেকে দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন দিয়ে থাকে। নিচে কুয়েতের বিভিন্ন পেশার বেতন সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা হলো।
- কুয়েতে একজন plumber বেতন পেয়ে থাকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
- ড্রাইভার বেতন পেয়ে থাকে ৬০থেকে ৭০ হাজার টাকা।
- একজন ইলেকট্রিশিয়ান এর বেতন হয়ে থাকে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা।
- শ্রমিকের সাহায্যকারী বা হেলপারের বেতন হয়ে থাকে ৩৫থেকে ৪৫হাজার টাকা।
- কোম্পানি ভিসার মাধ্যমে একজন ডেলিভারি বয় বেতন পেয়ে থাকে ৪৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা।
কুয়েতে সর্বনিম্ন বেতন কত?
কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত এটা জানার পাশাপাশি দেশটির সর্বনিম্ন বেতন কত সেটা জেনে রাখাও একান্ত প্রয়োজন।কুয়েতে সাধারণত কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে বেতনের বিষয়টা নির্ধারিত হয়ে থাকে।দেশটিতে কাজের সর্বনিম্ন বেতন হয়ে থাকে ৩৫,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা।
কুয়েত ভিসার দাম কত?
কুয়েত কোম্পানি ভিসার বেতন কত এটা জানার পর এবার জানব দেশটির ভিসার দাম কত। কুয়েতে ফ্রী ভিসা এবং কোম্পানি ভিসা এই দুই ধরনের ভিসা চালু রয়েছে। বর্তমানে কোম্পানি ভিসার দাম সাড়ে ছয় লাখ থেকে সাত লাখ কিংবা সাড়ে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ভিসার দাম এত বেশি হওয়ার কারণটা হয়তো অনেকে জানেন না। এটা হওয়ার কারণ হলো কুয়েতের একটি ভিসা যখন বের হয় তখন অন্ততপক্ষে ৮ থেকে ১০ জনের কাছে এটা বিক্রি হয়। বিক্রি হওয়ার পরে একজনের কাছ থেকে আরেকজনের কাছে পৌঁছে যাওয়ার কারণে এটার দাম বৃদ্ধি পায়। তবে,ভিসার প্রসেসিং আত্মীয় স্বজন কিংবা দক্ষ এজেন্সির মাধ্যমে করা হলে ভিসার দাম এত টাকা হয় না।
সাধারণত,কুয়েতের ভিসা সরাসরি প্রসেসিং করা হয় না সেখানে তিন থেকে চারটা দালাল থাকে প্রসেসিং এর জন্য। এজন্য কুয়েতের ভিসার দামটা বেশি হয়ে থাকে।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা পাওয়ার উপায়
কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত এটা জানার সাথে সাথে আপনাকে কুয়েত কোম্পানি ভিসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা থাকতে হবে। আপনি বৈধভাবে সরকারী এবং বেসরকারি এই দুইটি উপায়ে কুয়েত যেতে পারবেন।
আপনি যদি সরকারি ভাবে দেশটিতে যেতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে সরকারি ওয়েবসাইট বোয়েসেল আপনাকে দারুন সহযোগিতা করবে।এটি এমন একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান যেটি বিদেশী কর্মী পাঠাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
আপনি যদি বেসরকারিভাবে দেশটিতে যেতে চান তাহলে বিভিন্ন এজেন্সির সহযোগিতা নিয়ে কাজের ভিসায় দেশটিতে যেতে পারবেন।এটার জন্য প্রথমে আপনাকে সমস্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে, তারপর কাজের ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য এজেন্সীর সহযোগিতা প্রয়োজন হবে। এজেন্সিকে মোটা অংকের অর্থ প্রদানের মাধ্যমে কাজটা করিয়ে নিতে পারবেন।
আপনি চাইলে ঘরে বসে অনলাইন এর মাধ্যমে কোম্পানি ভিসার আবেদন করতে পারেন। কাজের অফার লেটার পাওয়ার মাধ্যমে অনলাইনে বিভিন্ন চাকরির ওয়েবসাইট ভিজিট করে সেখান থেকে কুয়েত জবের জন্য এপ্লাই করতে পারেন। পরবর্তীতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং কাজের অফার লেটার পেয়ে আপনি কুয়েত দূতাবাসে গিয়ে ভিসা প্রসেসিং করতে পারবেন।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা পেতে কি কি প্রয়োজন?
কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত জানার পর এবার জানবো কিকি কাগজ পত্র প্রয়োজন।নিন্মে সেগুলো দেয়া হলো।
- একটি বৈধ এবং গ্রহণযোগ্য পাসপোর্ট।
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- মেডিকেল সনদপত্র প্রয়োজন।
- কাজের অনুমতি পত্র অবশ্যই থাকতে হবে।
- কাজের চুক্তিপত্র থাকতে হবে।
- ভিসা আবেদন পত্রটি প্রয়োজন হবে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সকল সার্টিফিকেট।
- কাজের প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেট সঙ্গে রাখতে হবে।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র ইত্যাদি।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা কোন কাজের চাহিদা বেশি
কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত জানার পর এবার জেনে নেবো কোন কাজের চাহিদা বেশি। জীবনযাত্রার উন্নতমান ও ক্যারিয়ার গড়ার জন্য বিশ্বের অন্যতম ধনী রাষ্ট্র কুয়েতে যাওয়ার জন্য মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই জানে না দেশটির কোম্পানি ভিসা কোন কাজের চাহিদা বেশি। কুয়েত কোম্পানি ভিসায় কাজের চাহিদার বিষয়টি জানা থাকলে ভালো টাকা উপার্জন করা সম্ভব।
কোম্পানি ভিসায় সাধারণত যে সকল কাজের চাহিদা রয়েছে সেগুলো হলো। ড্রাইভিং ভিসা,মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ভিসা,রেস্টুরেন্ট ভিসা,টেকনিশিয়ান ভিসা,ক্লিনার ভিসা,কনস্ট্রাকশন ভিসা অফিস বয় ভিসা,ইত্যাদি।
শেষকথা
কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত এ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় উপরিউক্ত পোস্টটিতে তুলে ধরা হয়েছে।সেই সাথে তুলে ধরা হয়েছে সেখানকার সর্বনিম্ন বেতন কত, ভিসার দাম কত,কোম্পানি ভিসা পাওয়ার উপায়,কোম্পানি ভিসা পেতে কি কি প্রয়োজন,কোম্পানি ভিসা কোন কাজের চাহিদা বেশি,ইত্যাদি সহ যাবতীয় বিষয়। আশা করি, পোস্টটি আপনাদের সকলের উপকারে আসবে। এ রকম সুন্দর সুন্দর পোস্ট পেতে visabarta.com এর সাথেই থাকুন।
আরো জানুনঃ