লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫

লিথুনিয়া সেনজেনভুক্ত বালটিক দেশ। দেশটি বালটিক সমুদ্রের তীরে অবস্থিত। দেশটি ইউরোপীয় স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। সাধারণত,লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বলতে আমরা দেশটির কাজের ভিসাকে বুঝে থাকি। বর্তমানে কম খরচে সরকারিভাবে লিথুনিয়া যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।সরকারিভাবে লিথুনিয়া যেতে চাইলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরি করতে খরচ হবে ৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত।

বর্তমানে আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় লিথুনিয়া যেতে চাইলে খুব সহজে আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে,আপনি বাংলাদেশ সরকার যে এজেন্সি গুলোকে অনুমোদন দিয়েছে সেই এজেন্সি গুলোতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে পারেন। এভাবে,আপনি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিয়ে সহজে আবেদন প্রক্রিয়া সমাপ্ত করতে পারবেন।লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করতে খরচ হয় ১২০ ইউরো থেকে ১৫০ ইউরো। বাংলাদেশী টাকায় যেটার পরিমাণ ১৫হাজার টাকা থেকে ১৯ হাজার টাকার মত।

এগুলো ছাড়া‌ও,এই পোস্টটিতে আমি তুলে ধরবো লিথুনিয়া ভিসার দাম কত,ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস,কাজের বেতন কত,ভিসার মেয়াদ কতদিন,কাজের ভিসা প্রসেসিংয়ের সময় কত,ইত্যাদি সহ যাবতীয় বিষয়।

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে দেশটিতে গিয়ে কাজ করার আগ্রহ মানুষের মধ্যে অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ,ইউরোপের শেনজেন এরিয়াভুক্ত যে দেশটাতে সবচেয়ে বেশি ভিসা সাকসেস হয়েছে লিথুনিয়া তাদের মধ্যে অন্যতম।

লিথুনিয়া ভিসা সাকসেস রেট ৯৮.৭% অর্থাৎ,১০০০ লোক ভিসার জন্য আবেদন করলে ১৩ জন ভিসা পাবে না,বাকি ৯৮৭ জন ভিসা পাবে। লিথুনিয়াতে ৪ টাইপের ওয়ার্ক পারমিট হয়ে থাকে সেগুলো হলো।

  • EU BLUE CARD WORK PERMIT
  • INTRA COMPANY TRANSFER WORK VISA
  • WORK PERMIT FOR EMPLOYMENT IN LITHUANIA
  • SEASONAL WORK VISA

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম ৬ লাখ টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এজেন্সিতে  চেনাজানা লোক থাকলে ৫ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করা যায়।

ভিসার দাম কত?

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানার সাথে সাথে অনেকে ভিসার দাম কত সেটা সম্পর্কে জানতে চান। লিথুনিয়ায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা রয়েছে।

সাধারণত ভিসার দাম নির্ভর করে ভিসা ক্যাটাগরির উপর। অর্থাৎ,আপনি কোন প্রকারের ভিসায় দেশটিতে যেতে চান সেটার উপর। নিচে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসার দাম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

  • আপনি কোম্পানি ভিসায় লিথুনিয়া যেতে চাইলে ভিসার দাম হবে ৪ থেকে ৬ লাখ টাকা।
  • স্টুডেন্ট ভিসায় লিথুনিয়া যেতে চাইলে ভিসার দাম হবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকা।
  • টুরিস্ট বা ভ্রমণ ভিসায় লিথুনিয়া যেতে চাইলে ভিসার দাম পড়বে ২ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা।
  • ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে দেশটিতে পাড়ি জমাতে চাইলে ভিসার দাম হবে ২ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা।
  • ড্রাইভিং ভিসায় লিথুনিয়া যেতে চাইলে ভিসার দাম হবে ৪ লাখ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা।

 

লিথুনিয়া কাজের ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য অনেকগুলো ডকুমেন্ট প্রয়োজন নিচে সেগুলো বর্ণিত হল।

  • ৬মাস মেয়াদী একটি বৈধ এবং গ্রহণযোগ্য পাসপোর্ট থাকা প্রয়োজন,যেটাতে অন্তত দুটি পৃষ্ঠা ফাঁকা থাকবে।
  • পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি থাকতে হবে। তাছাড়া, ছবির জন্য আরো যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে সেগুলো হলো।
  • ছবির সাইজ ৩৫*৪৫এম এম হতে হবে।
  • ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড অবশ্যই লাইট কালারের হওয়া উচিত।
  • ব্যাকগ্রাউন্ড এর সাথে মিলে যায় এমন পোশাক বা রং পরিহার করতে হবে।
  • আবেদনকারীর ব্যাংক স্টেটমেন্ট কপি অবশ্যই থাকতে হবে।
  • কাজের দক্ষতার বৈধ প্রমাণপত্র সার্টিফিকেট।
  • মেডিকেল রিপোর্ট বা সার্টিফিকেট।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
  • আবেদনকারীর আয়ের উৎসের এভিডেন্স বা প্রমাণপত্র থাকতে হবে।
  • জব অফার লেটার প্রয়োজন।
  • লিথুনিয়ান নিয়োগকর্তা প্রদত্ত চিঠি বা আমন্ত্রণ পত্র থাকতে হবে ।

লিথুনিয়ায় কাজের বেতন কত?

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানার সাথে সাথে এবার জানবো দেশটির কাজের ভিসার বেতন কত সেটা সম্পর্কে। সাধারণত,প্রথম অবস্থায় লিথুনিয়ায় যদি কোন শ্রমিক কাজ করতে যায় তাহলে তাদের বেতন হয়ে থাকে ৫০০ ইউরো থেকে ৬০০ ইউরো বাংলাদেশি টাকায় যেটার পরিমাণ হয়ে থাকে ৬২,৮১৫ টাকা থেকে ৭৫,৩৭৮ হাজার টাকা।

লিথুনিয়ায় একজন শ্রমিক যদি মাসে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা পরিশ্রম করে কাজ করে তাহলে সে ৬০০ থেকে ৭০০ ইউরো পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে।

কাজের ভিসার মেয়াদ কতদিন?

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানানোর পর এবার জানাবো দেশটির কাজের ভিসার মেয়াদ কত দিন সেটা সম্পর্কে। আপনি লিথুনিয়ার কাজের ভিসার মেয়াদ পেতে পারেন সর্বোচ্চ ১ বছর। কোন শ্রমিকের EU BLUE CARD থাকলে সে ২ বছর ভিসার মেয়াদ পেয়ে থাকে।

লিথুনিয়া কাজের ভিসা প্রসেসিং এর সময় কত?

আপনার সকল ডকুমেন্ট সঠিক হলে ৭ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে কাজের ভিসার প্রক্রিয়াকরণ সম্পন্ন হয়ে যায়। আর যদি কোন প্রকার জটিলতা থেকে থাকে তাহলে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। সুতরাং,সকল কাগজপত্র নির্ভুল ও সঠিক হওয়া বাঞ্ছনীয়।

বাংলাদেশে অবস্থিত লিথুনিয়ার এম্বেসি

বাংলাদেশে অবস্থিত লিথুনিয়ার এম্বাসি কোথায় সেটা জানা একান্ত জরুরী। লিথুনিয়া কনসুলেট অফিসের অ্যাড্রেসটা হলো।

822/3 Begum Rokeya Sharani Mirpur,Dhaka 1216.

Phone:+8801871001399, 8802902357.

লিথুনিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি?

লিথুনিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি এটা সম্পর্কে জানার আগ্রহ অনেকের। সাধারণত, দেশটিতে যে কাজগুলোর চাহিদা বেশি তার মধ্যে রয়েছে,

  • ড্রাইভিং
  • ইলেকট্রিক্যাল
  • Construction
  • ফ্যাক্টরি
  • রেস্টুরেন্ট
  • ওয়েল্ডার
  • ক্লিনার,ইত্যাদি।

ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন

লিথুনিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া নিয়ে অনেকে চিন্তিত হয়ে থাকেন। বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ আপনি চাইলে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।

সার্কুলার অনুযায়ী আবেদনে আগ্রহী হলে প্রথমে আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো গুগল ক্রোমে প্রবেশ করা। এর পরের কাজটি হলো লিথুনিয়া ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সার্চ করা যাতে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটটি পাওয়া যায়।

সাইটটি পাওয়ার পর আপনাকে এটার মাধ্যমেই Application form টি Collect করতে হবে। অনলাইনে খালিঘর গুলো নির্ভুলভাবে পূরণ এবং এজেন্সির সহযোগিতায় আপনি সহজেই Work permit visa পেয়ে যাবেন।

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কতদিন লাগে?

আপনি যদি সমস্ত ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র সঠিকভাবে সাবমিট করতে পারেন তাহলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরি হতে সময় লাগবে ১২ থেকে ২৫ দিন।

শেষ কথা

উপরিউক্ত পোস্টটিতে আমি লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছি।যেমন,লিথুনিয়া ভিসার দাম কত,কাজের ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস,কাজের বেতন কত,ভিসার মেয়াদ কতদিন,ভিসা প্রসেসিংয়ের সময় কত,ইত্যাদি সহ যাবতীয় বিষয়। আশাকরি,পোস্টটি পড়ে আপনার সকলেই উপকৃত হবেন।ভিসা সংক্রান্ত এরকম সুন্দর সুন্দর পোস্ট পেতে visabarta.com এর সাথেই থাকুন।

আরো জানুনঃ

জাপান স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত জেনে নিন

Leave a Comment