জাপান স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত জেনে নিন।

জাপান স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত জেনে, স্টুডেন্ট ভিসায় জাপানে গিয়ে পড়াশোনা করে ক্যারিয়ার ও উন্নত জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখছেন? যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে এই পোস্টটি  আপনার জন্য। পৃথিবীর উন্নত ও অসাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা গুলোর মধ্যে জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থা অন্যতম।

এই দেশটি শুধুমাত্র তার মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সুস্বাদু খাদ্যের জন্যই বিশ্বব্যাপী সমাদৃত নয়,বরং বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে সারা বিশ্বে প্রশংসনীয়। এখানে রয়েছে ৮৬ টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ৯৫ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৫৯৭ টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়।

এই পোস্টটিতে আমি তুলে ধরেছি জাপান স্টুডেন্ট ভিসার প্রয়োজনীয় সব তথ্য যেমন, জাপান স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত, স্টুডেন্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, জাপান স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন প্রণালী এবং জাপান স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা সহ যাবতীয় তথ্যাবলী। আশাকরি, পোস্টটি পড়লে আপনি জাপান স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত সকল তথ্যাবলী জেনে উপকৃত হবেন।

জাপান স্টুডেন্ট ভিসা খরচ

হ্যাঁ এবার জেনে নেয়া যাক জাপান স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত। জাপান স্টুডেন্ট ভিসার প্রাথমিক খরচের মধ্যে রয়েছে আবেদন ফি যেটা আপনাকে জাপানের দূতাবাস বা কনসুলেটে গিয়ে প্রদান করতে হয়। এটার পরিমাণ সাধারণত ৩,০০০ জাপানি ইয়েন।

এরপর আপনাকে প্রদান করতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবেদন ফি কারণ জাপানের প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য নিজস্ব আবেদন ফি বিদ্যমান থাকে যেটার পরিমাণ হয়ে থাকে সাধারণত  ১০,০০০ থেকে ৩০,০০০ জাপানি ইয়েন।

যদি আপনি জাপানি ভাষায় দক্ষ না হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে কোন জাপানি ভাষা স্কুলে ভর্তি হওয়া। তবে এটার খরচ নির্ভর করবে প্রতিষ্ঠান এবং আপনার কোর্সের সময়কালের উপর।

ভিসা আবেদনের জন্য যদি আপনার মেডিকেল পরীক্ষার প্রয়োজন হয় তবে আপনাকে সেটার জন্য কয়েক হাজার টাকা গুনতে হতে পারে।

এটা ছাড়াও আরো অন্যান্য খরচ রয়েছে যেমন,ভ্রমণ খরচ, জীবনযাত্রার খরচ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খরচ, টিউশন ফি  স্বাস্থ্য বীমা ইত্যাদি।

জাপান স্টুডেন্ট ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

জাপান স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত জেনেছি। এবার জেনে নেব কি কি কাগজপত্র লাগে। জাপান স্টুডেন্ট ভিসায় যে যে ডকুমেন্টস লাগে তা নীচে দেওয়া হল।

  • জাপান স্টুডেন্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্টসগুলোর বর্ণনা নিচে প্রদান করা হলো
  • একটি বৈধ এবং গ্রহণযোগ্য পাসপোর্ট থাকা অপরিহার্য।
  •  ভিসা করার জন্য আবেদন ফরম থাকতে হবে ।
  • ব্যাংক ব্যালেন্সের প্রমাণপত্র থাকতে হবে।
  • পাসপোর্ট আকারের দুটি ছবি।
  • আপনি কোন অপরাধমূলক ও ফৌজদারি কাদের সাথে জড়িত না এ মর্মে প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে।
  • আপনি কেন স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে জাপানে পড়াশোনা করতে আগ্রহী সে সম্পর্কিত বক্তব্য থাকতে হবে।
  • CV ও RESUME
  • Visa enrollment electronic confirmation scan copy

স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে কি জাপানে কাজ করা যায়?

হ্যাঁ, স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আপনি জাপানে গিয়ে সপ্তাহে ২৮ ঘন্টা পর্যন্ত পার্ট টাইম কাজ করার সুযোগ পাবেন। তাছাড়া আপনি এখানে কুরিয়ার সার্ভিস, রেস্টুরেন্ট ও বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করার সুযোগ পাবেন।

জাপান স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করার নিয়ম

জাপান স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত জানার পর আবেদন করার নিয়ম জানবো। জাপান স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া নির্ভর করে আপনার কোর্সের মেয়াদের উপর। প্রথমে কোর্স বাছাই করা। তারপর জাপানের যে কোন স্কুল, কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। আপনি যদি লং টার্ম কোর্স সিলেক্ট করেন তাহলে আপনার পছন্দ করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আপনার ভিসার প্রসেসিং হবে।

সাধারণত, ভিসা আবেদনের জন্য নির্ধারিত সময় ৫ মাস। ভিসা পাওয়ার জন্য এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ইউনিভার্সিটি অথবা ইমিগ্রেশন অফিসে আবেদন করতে হবে।প্রথম পর্যায়ে আপনাকে ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। এটা ভালোভাবে পূরণ করার পর বিশ্ববিদ্যালেয় সাবমিট করতে হবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনার ফর্মটি ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করবে, তারা যদি কোন ধরনের ভুল ত্রুটি বা সমস্যা খুঁজে না পায় তাহলে সেটা সরাসরি তারা ইমিগ্রেশন অফিসে পাঠিয়ে দিবে।

ইমিগ্রেশন অফিসে পৌঁছানোর যা করবে

ইমিগ্রেশন অফিসে পৌঁছানোর পর পুনরায় খতিয়ে দেখবে এবং সেটা যদি গৃহীত হয় তাহলে তারা আপনাকে Certificate of eligibility প্রদান করবে।এই Certificate of eligibility আপনাকে ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিতে হবে। সেখানে কোর্স শুরু হওয়ার এক মাস আগে তারা Certificate of enrollment প্রদান করবে। মনে রাখার মত একটি বিষয় হলো, এটি পাওয়ার আগে আপনি দুই মাসের মত সময় পাবেন। প্রথম সেমিস্টার ফি এই দুইমাস সময়ের মধ্যেই জমা দিতে হবে।

সবশেষে জাপান দূতাবাসে যোগাযোগ করা এবং সেখানে আপনার সার্টিফিকেট অব এনরোলমেন্ট, পাসপোর্ট, পাসপোর্ট এর ছবি এবং জাপান ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরকৃত ভিসার আবেদন ফরমের ছবি জমা দিতে হবে। এভাবেই জাপানের ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়াটি সুন্দরভাবে শেষ করতে পারবেন।

স্টুডেন্ট ভিসায় জাপান যাওয়ার সুবিধা

জাপান স্টুডেন্ট ভিসা খরচ জেনেছি।স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে জাপান যাওয়ার অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে তার মধ্যে প্রধান সুবিধা হল, আপনি এখানকার উন্নতমানের শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে পরিচিত হতে পারবেন। কারণ জাপান বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থার কারণে সারা বিশ্বে সুনাম অর্জন  করেছে। তাছাড়া এখানে পার্টটাইম কাজ করে ইনকাম করার ও সুযোগ রয়েছে।

আপনি স্টুডেন্ট ভিসায় জাপানে গিয়ে সপ্তাহে ২৮ ঘন্টা পর্যন্ত পার্ট টাইম কাজ করার সুযোগ পাবেন। যেটা আপনার জীবনযাত্রার ব্যায়ভার মেটাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া জাপানে পড়াশোনা চলাকালীন সেখানকার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান লাভ করার সুযোগ পাবেন। জাপানে পড়াশোনা আপনার কর্ম জীবনের সম্ভাবনাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

জাপানের ভিসা পেতে কতদিন লাগে?

জাপান স্টুডেন্ট ভিসা খরচ জেনেছি। জাপান স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে সাধারণত ৫ মাস অপেক্ষা করা লাগতে পারে। কারণ জাপানি ইমিগ্রেশন সেন্টার বছরে শুধুমাত্র চারবার স্টুডেন্ট ভিসা প্রদান করে থাকে (জানুয়ারি,এপ্রিল জুলাই এবং অক্টোবর)। আবেদনের জন্য একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে এই  সময়সীমার পরে জমে থাকা আবেদন পত্রগুলোকে বিবেচনার বাহিরে রাখা হয়।

শেষ কথা

উপরের পোস্টটিতে আমি জাপানের স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় সুন্দরভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি যেমন,  জাপান স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন,জাপান স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত,স্টুডেন্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ যাবতীয় বিষয়াবলি। আশা করি পোস্টটি পড়লে আপনারা জাপানের স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত সকল তথ্য জেনে উপকৃত হবেন। ভিসা সংক্রান্ত এরকম সুন্দর সুন্দর পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন।

আরো জানুনঃ

মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির যোগ্যতা সমূহ

Leave a Comment