আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে সেখানে পড়তে যাওয়া অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। কারণ,সেখানে রয়েছে পড়াশোনা করে ক্যারিয়ার গড়ার সুবর্ণ সুযোগ। তাছাড়া,সেখানে রয়েছে স্বীকৃত এবং নামকরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। যেটা বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষার্থীদের কাছে একটি আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
সুতরাং,উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য বিদেশী শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে দেশটি। আমেরিকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের শিক্ষা দিয়ে থাকে এবং সেই সাথে তাদেরকে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করে থাকে।কিন্তু স্টুডেন্ট ভিসায় কিভাবে আমেরিকা যাওয়া যায় সেটা সম্পর্কে অনেক শিক্ষার্থীই জানেন না।
এ পোস্টটিতে আমি আমেরিকা স্টুডেন্ট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সুন্দর ভাবে তুলে ধরবো। যেমন,আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের নিয়ম,ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা,আমেরিকা ভিসা খরচ,সেখানে যেতে কত টাকা লাগে,ব্যাংক স্টেটমেন্ট,স্টুডেন্ট ভিসার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস,স্টুডেন্ট ভিসা পেতে কতদিন লাগে,ইত্যাদি সহ যাবতীয় বিষয়।
আশাকরি,পোস্টটি পুরোটা পড়লে আপনারা আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত সকল তথ্য জেনে উপকৃত হবেন।চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের নিয়ম
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন নিয়ে অনেকেই নানা জটিলতায় ভুগতে থাকেন। ভিসা আবেদনের জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ করে আপনি সহজেই এটা করতে পারবেন। আপনি ইচ্ছা করলে অনলাইন বা এজেন্সির মাধ্যমে আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে পারবেন।
তবে স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করার জন্য আপনাকে তিনটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেগুলো হলো ফাইন্যান্সিয়াল সাপোর্ট,রেজাল্ট,এবং আইইএলটিএস অথবা টোফেল। আপনাকে ২৫ থেকে ৩৫ লাখ টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স দেখাতে হবে।
স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের জন্য আপনার রেজাল্ট যতটা না গুরুত্বপূর্ণ তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ IELTS অথবা TOEFL এর উপর একটা ভালো স্কোর। আপনার IELTS স্কোর ৬.৫ অথবা তার উপরে থাকলে স্কলারশিপ অথবা একটা ভালো কলেজে পড়ার সুযোগ পাবেন।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনাকে বিষয় নির্বাচন করতে হবে যেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তারপর আপনাকে কলেজ পছন্দ করতে হবে। আপনি চাইলে তিন থেকে থেকে পাঁচটি কলেজে আবেদন করতে পারবেন।
তবে,কলেজ পছন্দ করার সময় আপনাকে কলেজ ফি কত সেটা দেখে নিতে হবে। কারণ কোন ব্যয়বহুল কলেজে আবেদন করলে এবং সেটার ফি পরিশোধে ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে সেটা ছেড়ে দেওয়া লাগতে পারে।
কলেজে এপ্লাই করার পূর্বে আপনাকে কিছু ডকুমেন্টস প্রস্তুত রাখতে হবে। যেমন,পাসপোর্ট,C.V সহ আপনার সকল ট্রান্সক্রিপ্টের ইংলিশ ভার্শন,স্টাডিগ্যাপের জন্য স্টেটমেন্ট অফ পারপাস,দুইটি রেকমেন্ডেশন।
এবার কলেজে এপ্লাই করতে হবে যেটা অনেক সহজ। আপনি কলেজের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে এপ্লিকেশন ফিলাপ করুন। এপ্লাই করার পর কলেজ যদি আপনাকে আই টোয়েন্টি দিয়ে থাকে তাহলে সেটার অর্থ হবে কলেজ আপনার অ্যাপ্লিকেশন গ্রহণ করেছে। এভাবেই আপনি আপনার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য যে যোগ্যতাগুলো প্রয়োজন সেগুলো নিচে দেওয়া হল।
- একটি বৈধ এবং গ্রহণযোগ্য পাসপোর্ট থাকা বাঞ্ছনীয়।
- ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।
- মেডিকেল রিপোর্ট।
- পাসপোর্ট এর মেয়াদ থাকতে হবে সর্বনিম্ন ৬ মাস বা তার বেশি।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের সার্টিফিকেট,ইত্যাদি।
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ।
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা সম্পর্কে জানার পর এবার জানবো সে দেশের স্টুডেন্ট ভিসা খরচ সম্পর্কে। স্টুডেন্ট ভিসায় আমেরিকা যেতে হলে আপনাকে সর্বমোট খরচ গুনতে হবে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু অনেকে দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়ে থাকে। এসব চক্র ভালো কাজের কথা বলে নানা রকম সমস্যার মধ্যে ঠেলে দিবে। তাই এদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।
আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে?
আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে এ প্রশ্নটি অনেকের। সরকারি ভাবে আমেরিকা যেতে খরচের পরিমাণ ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা। আপনি যদি বেসরকারিভাবে যেতে চান তাহলে খরচ হবে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। তবে এ খরচের তারতম্য হতে পারে।
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা ব্যাংক স্টেটমেন্ট
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কে জানার সাথে সাথে এবার জেনে নেব ব্যাংক স্টেটমেন্ট সম্পর্কে।
স্টুডেন্ট ভিসায় এপ্লাই করার পূর্বে আপনার ব্যাংকে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা থাকতে হবে। অনেকে জানতে চান এই ব্যাংক স্টেটমেন্টটা কয় মাসের জন্য রাখতে হয়।
আসলে দীর্ঘ সময়ের জন্য রাখলে ভালো হয়। যেমন,আপনি এম্বাসিতে যদি ছয় মাস মেয়াদী ব্যাংক স্টেটমেন্ট শো করেন তাহলে তারা বুঝতে পারে যে ব্যাংক স্টেটমেন্টটা রিয়েল। কারণ অনেকে ফেইক ব্যাংক স্টেটমেন্ট শো করে যেটা তাদের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে।এসব কারণে তারা আপনাকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করতে পারে।
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলোর বর্ণনা নিচে প্রদান করা হলো।
- আপনার হাই স্কুল ও কলেজের সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট প্রয়োজন।
- IELTS স্কোর ৬.৫ থেকে ৭.০ থাকতে হবে।
- একটি গ্রহণযোগ্য পাসপোর্ট থাকতে হবে।
- স্পন্সর ট্রেড লাইসেন্স।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট,ইত্যাদি।
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা পেতে কতদিন লাগে?
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা পেতে কতদিন লাগে এ প্রশ্নটি অনেকের। সাধারণত,আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য কয়েক সপ্তাহ প্রয়োজন হয়। তবে আবেদনকারী এক মাসের মধ্যে একটি প্রতিক্রিয়া পেতে পারে।
শেষ কথা
উপরের আলোচনায় আমি আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় সুন্দরভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশাকরি,পোস্টটি পড়ে আপনারা সবাই অনেক উপকৃত হয়েছেন। এরকম সুন্দর সুন্দর পোস্ট পেতে Visabarta.com এর সাথেই থাকুন।
আরো জানুনঃ